প্রোডাকশন লাইনের একজন সুইং এক্সিকিউটিভ বা সুইং টেকনিশিয়ান কি কি ধরনের দায়িত্ব কর্তব্য পালন করে থাকেন সে সমস্ত বিষয় গুলো নিয়ে এই পোস্টের বিস্তারিত।
একজন সুইং টেকনিশিয়ান প্রোডাকশন এক্সিকিউটিভ সারাদিন অনেকগুলো কাজ করে থাকেন তবে এই পোস্টে শুধুমাত্র টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আগে আলোচনা করা হয়েছে।
মুখ্য পয়েন্টগুলি
- 1 নতুন স্টাইল এর জন্য সুইং টেকনিশিয়ান এর করনীয়ঃ
- 2 রুটিন অনুয়াযী সুইং টেকনিশিয়ান এর কাজঃ
- 2.1 ফ্রিজ প্লান বুঝে নেওয়াঃ
- 2.2 লাইন ব্যালেন্সিং করা সুইং টেকনিশিয়ান এর কাজ
- 2.3 ফোরকাস্ট মিটিং করাঃ
- 2.4 অধিনস্থদের কাজ ফলো আপ করাঃ
- 2.5 সমস্যায় সংযুক্ত হয়ে সমাধান করাঃ
- 2.6 ছুটির প্লান করাঃ
- 2.7 ট্রেনিং প্লান করাঃ
- 2.8 ইনপুট ও অন্যান্য সাপ্লাই ফলো আপঃ
- 2.9 ক্রিটিক্যাল প্রসেস এ বিশেষ নজরদারিঃ
- 2.10 টার্গেট ও ইফিসিয়েন্সি হিসেব করাঃ
- 2.11 শিপমেন্ট প্লান অনুযায়ি কাজ করাঃ
- 2.12 বায়ার রিকোয়ারমেন্টগুলো মেইন্টেইন করাঃ
- 3 নিডেল / শার্প টুলস / মেটাল কন্ট্রোলিং এর জন্য করনীয়ঃ
নতুন স্টাইল এর জন্য সুইং টেকনিশিয়ান এর করনীয়ঃ
একটা লাইনে যখন একটা নতুন স্টাইল শুরু হয় তখন একজন প্রোডাকশন এক্সিকিউটিভ সুইং টেকনিশিয়ান কি কি ধরনের দায়িত্ব কর্তব্য পালন করেন সে বিষয়গুলো নিয়ে এই অংশে আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
সাইজ সেট টেকনিক্যাল ফাইলের সাথে ম্যাচিং করে ভাল করে দেখে নিতে হবে।
যখন একটা নতুন স্টাইল লাইনে শুরু হয় তখন টেকনিশিয়ান সুপারভাইজারকে সাইজ সেট বানানোর জন্য দিক নির্দেশনা দিতে হবে। সাইজ সেট বানানো হলে টেকনিশিয়ানকে টেকনিক্যাল ফাইল এর রিকোয়ারমেন্ট গুলো ভালো করে দেখে সাইজ সেট স্যাম্পল এপ্রুভ স্যাম্পলের সাথে মিলিয়ে চেক করে দেখতে হবে। সুইং টেকনিশিয়ানকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে বাল্ক প্রোডাকশনে আসার জন্য যেরকম স্যাম্পল প্রয়োজন ছিল ঠিক তেমনি ভাবে সাইজ সেট বানানো হয়েছে ।
সাইজ সেট এপ্রুভাল নেওয়া সুইং টেকনিশিয়ান এর দায়িত্ব
অন্তত ৩ দিন আগে পি এন্ড ডি থেকে এপ্রুভাল নিতে হবে ( সাইজ সেট)। একটা প্রোডাকশন লাইনে কোন স্টাইলটা শুরু হচ্ছে সেই স্টাইলের জন্য সাইজ সেট আগেই বানিয়ে সেটাকে production and development ডিপার্টমেন্ট পাঠাতে হবে সেটাকে যাচাই বাছাই বা এনালাইসিস করার জন্য। এরপর যোগাযোগ রাখতে হবে কখন ফাইনাল রিপোর্ট তৈরি হয় ।তবে বালক প্রোডাকশনে স্টাইলটা শুরু হওয়ার আগেই সাইজ সেট প্রোডাকশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাপ্রভাল নিতে হবে।
অর্থাৎ লাইনের মধ্যে যে স্টাইল শুরু হতে যাচ্ছে সেটা যে হুবহু সাইজ সেটের মতো সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে যাতে করে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ঝামেলাহীন একটি প্রোডাকশন শুরু করা যায়।
পি.পি. মিটিং এ অংশ নেওয়া সুইং টেকনিশিয়ান এর কাজ
পি.পি. মিটিং এ অংশগ্রহণ করতে হবে এবং পি.পি. মিটিং এ সব কিছু বিস্তারিত জেনে নিতে হবে।
একজন সুইং টেকনিশিয়ান কে অবশ্যই অবশ্যই pre production meeting এ অংশগ্রহণ করতে হবে এবং এর প্রত্যেকটা টেকনিকেল সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে খুব ভালভাবে বুঝে নিতে হবে।
বাল্ক প্রোডাকশনে শুরু হবার জন্য এর আগেই সাইজ সেট বানানো হয়েছে সেই রিপোর্ট এবং সাইজ সেট বানানোর সময় কি কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়া গেছে সেই সব কিছু বিষয়গুলো নিয়ে পি পি মিটিংয়ে তুলে ধরতে হবে এবং সব রকমের সমস্যার সমাধান pre-production মিটিং থেকে নিতে হবে।
এইজন্য সাইজ সেট বানানোর সময় টেকনিশিয়ানকে সংযুক্ত থাকতে হবে এবং সাইজ সেট বানানোর পর এর মধ্যে কি কি ধরনের সম্ভাব্য সমস্যা পাওয়া গেল সেই বিষয়গুলো নিয়ে সুপারভাইজারের সাথে আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
ঠিক একই ভাবে প্রি-প্রোডাকশন মিটিং এর আলোচনার পেক্ষিতে কি কি ধরনের ক্রিটিক্যাল প্রসেস হতে পারে এবং সে গুলোকে কিভাবে ওভারকাম করা যায় সেই বিষয়গুলো নিয়ে সুপারভাইজারকে পরামর্শ দিতে হবে এবং তাকে সহযোগিতা করতে হবে যাতে করে একটা কোয়ালিটি সম্পন্ন প্রোডাকশন দেওয়া যায়।
লে আউটে সহযোগিতা সুইং টেকনিশিয়ান এর দায়িত্ব
আই.ই, মেইনটেনেন্স এবং কিউ.এ. কে লাইন লে-আউট এর সময় সহযোগিতা করতে হবে।
গার্মেন্টস এর মধ্যে লেআউট সাধারণত আই ই ডিপার্টমেন্ট মেনটেনেন্স, লাইন কোয়ালিটি, সুপারভাইজার এবং টেকনিশিয়ানের সহযোগিতা নিয়ে করে থাকেন। তবে এখানে সবচেয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন একজন সুইং টেকনিশিয়ান।
কেননা সুইং এর জন্য সবচেয়ে ভালো ভাবে কোন একটা প্রসেসের ঠিক কোন ভাবে সুইং করলে বা উপযুক্ত কোয়ালিটি রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী প্রসেস পাওয়ার জন্য কি কি ধরনের এডিশনাল অ্যাটাচমেন্ট যুক্ত করার প্রয়োজন বা কি উপায়ে সম্পন্ন করা যায় সেটার সবচেয়ে ভালো দখল, একজন সুইং টেকনিশিয়ানের আছে।
এই কারণে টেকনিশিয়ানের লে আউটের সময় উপস্থিত থাকতে হবে এবং প্রত্যেকটা প্রসেসের করতে হবে যাতে করে প্রতিটা প্রসেস এপ্রুভ স্যাম্পল এর মত করে শুরু হয়।
ব্যাক টু ব্যাক লাইন ফিডিং নিশ্চিত করাঃ
একটা মেশিনের প্রসেস শেষ হবে এবং তার প্রসেস টা সামনের জনকে দিবে। এবং এর সাথে সাথেই নতুন স্টাইলের লে আউটটা আসতে থাকবে। এক স্টেপ সামনের দিকে শেষ হয়ে এগুবে এবং পিছন দিক দিয়ে এক স্টেপ নতুন স্টাইল সামনের দিকে এগিয়ে আসবে। এটাইকে লাইন ফিডিং বলে।
একটা একটা করে লাইন ফিডিং করতে করতে যখন পুরো লাইনের ফিডিং শেষ হবে তখন ঐ লাইনের ফিডিং করতে যে সময় লাগলো সেটাকে লাইন ফিডিং লিড টাইম বলে।
লাইন ফিডিং টাইম যত কম হবে প্রডাকশন তত বেশি।
লে আউট এর আগে একজন সুইং এক্সিকিউটিভকে নিশ্চিত করতে হবে যে ওই লাইনের জন্য যত ধরনের ম্যাটেরিয়াল প্রয়োজন তার সব কিছুই ইতিমধ্যে ফ্লোর সাব স্টরে জমা আছে। সবকিছু রেডি থাকলেই কেবল মাত্র লাইন লে আউট শুরু করা যাবে। দেখা গেল লাইন লে আউট শুরু হয়ে গেছে কিন্তু এখনো লেবেল বা অন্য কোন একটা ম্যাটেরিয়াল এখনো পৌছায় নাই। তাহলে এটার কারণে একটা বাধা তৈরী হবে । অনুরূপভাবে অন্য কোন কিছুর অভাব এর কারণে যাতে বন্ধ না হয়ে যায় সেই ব্যাপারটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব হচ্ছে একজন সুইং এক্সিকিউটিভ এর।
ফাস্ট আউটপুট এনালাইসিস প্রডাক্ট এনালাইসিস করা সুইং টেকনিশিয়ান কাজ
প্রথম ১০ পিছ তৈরি হবার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাথে আলোচনা করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনী নিতে হবে।
ফাস্ট আউটপুট এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রোডাকশন লাইনে যখন একটা উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে প্রথম যে প্রডাকশনের গার্মেন্টসগুলোকে ফাস্ট আউটপুট বলে। ফাস্ট আউটপুট রিপোর্ট এনালাইসিস করার জন্য প্রথম ১০ পিছ নিয়ে রিপোর্ট করা হয়। এই ১০ পিস গার্মেন্টস নিয়ে যে এনালাইসিস রিপোর্ট তৈরি করা হয় সেটাকে ফাস্ট আউটপুট রিপোর্ট বা টেন পিছ রিপোর্ট বলা হয়।
রুটিন অনুয়াযী সুইং টেকনিশিয়ান এর কাজঃ
অর্থাৎ যে সমস্থ কাজ তাকে রুটিন মাফিক করতে হয় সেই কাজগুলোর একটা তালিকা করার চেস্টা করা হয়েছে এই অংশে।
আসলে একজন সুইং এক্সিকিউটিভের প্রধান কাজ হচ্ছে তার অধিনে থাকা লাইনের অল ইন অল সমস্যার সমাধান করে ভাল মতন প্রডাকশন বের করে আনা। কোথাও কোন সমস্যা হলে দ্রুত সেই সমস্যার সমাধান করা। প্রডাকশন যেন কোন অবস্থাতেই বন্ধ হয়ে না যায় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা। এবং লাইনের টার্গেট ও ইফিসিয়েন্সি অর্জন করা।
যাই হোক আমরা রুটিন মাফিক মূল আলোচনায় ফিরে আসি।
ফ্রিজ প্লান বুঝে নেওয়াঃ
পি.এম. এর কাছ থেকে ফ্রিজ প্লান সংগ্রহ করে নিতে হবে এবং ভাল করে দেখে বুঝে নিতে হবে।
ফ্রিজ প্লান প্রোডাকশন ম্যানেজার এর কাছ থেকে সংগ্রহ করে নিতে হবে এবং কবে কোন প্লান লাইনে আসতেছে সে ব্যাপারটা ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে এবং লাইনের শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় যত ধরনের রিকোয়ারমেন্ট আছে যেমন ফ্রেব্রিক থেকে শুরু করে যত কিছু আছে সব কিছু ঠিকঠাক ভাবে চলে এসেছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে। যাতে করে যখন লাইনে লে আউট শুরু হবে তখন যেন কোনো অবস্থাতেই বাধার সম্মুখীন না হয় ।
লাইন ব্যালেন্সিং করা সুইং টেকনিশিয়ান এর কাজ
মর্নিং লাইন ব্যালেন্সিং ফলোআপ করতে হবে।
লাইন বালান্সিং হচ্ছে সবকিছুকে ব্যালেন্স করে লাইনের উৎপাদনকে যথাযথ করা।প্রতিদিন সকালবেলা এসেই লাইনের পরিস্থতি অনুযায়ি একটা উৎপাদনমূখি পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য লাইনটা ব্যালেন্স করে নিতে হবে। এইটা হইতে পারে মানুষ, মেশিন বা কোন একটা প্রসেস।
সুইং টেকনিশিয়ান যেখানে যা দরকার নেই সেখান থেকে নিয়ে যেখানে যা দরকার সেখানে দিয়ে কিংবা সম্পদের সর্বোর্চ ব্যবহার করে প্রডাকশনমুখি একটা লাইন শুরু করা।
ফোরকাস্ট মিটিং করাঃ
সুইং টেকনিশিয়ান কে দৈনিক ফোরকাস্ট মিটিং এ অংশগ্রহণ করতে হবে এবং লাইন ওয়াইজ ডেইলি প্রডাকশন প্লান এবং ইফিসিয়েন্সি নিশ্চিত করতে হবে।
ফোরকাস্ট মিটিং হচ্ছে যেখানে প্রতিদিন সকালবেলা একটা ফ্লোরের সকল সুপারভাইজারকে নিয়ে সকল ম্যানেজমেন্ট এর সাথে যে মিটিং করা হয়।
এখানে সুপারভাইজারকে আগের দিনের ইফিসিয়েন্সি কত ছিল এবং প্রোডাকশন টার্গেট কত ছিল এবং সে কত এ্যাসিভ / অর্জন করতে পেরেছে সেটা দেখানো হয় । এবং কি কি কারণে সেগুলো অর্জন হয়েছিলো নাকি অর্জন হয় নি সে বিষয়গুলি নিয়েও আলোচনা করা হয়।
এই ফোরকাস্ট মিটিং এ আজকের লাইন ওয়াইজ কত টার্গেট হবে এবং ইফিসিয়েন্সি পার্সেন্টেজ কত থাকবে সেই বিষয়টিও সুপারভাইজারকে ভালো ভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয় । এই ইফিসিয়েন্সি অর্জন করার জন্য যদি কোন সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেটাকে কিভাবে সলভ/সমাধান করে তার টার্গেট অর্জন করা যায় সে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা দেওয়া হয়।
অধিনস্থদের কাজ ফলো আপ করাঃ
অধীনস্থদের তাদের জে.ডি অনুযায়ি কাজ মনিটরিং করতে হবে
একজন সুইং এক্সিকিউটিভ / টেকনিশিয়ান এর আন্ডারে যতটা লাইন আছে এবং সেই লাইন সম্পর্কিত যত ধরনের কর্মচারী আছে তারা সবাই তাদের নিজ নিজ কাজ, তার দায়িত্ব কর্তব্য অনুযায়ী ঠিকমতো করতেছে কি না সে বিষয়টি তদারকি করার দায়িত্ব হচ্ছে তার। কারণ একটা প্রোডাকশন স্মুথলি করার জন্য প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে তার কাজ অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
কোথাও একটা বাঁধার সৃষ্টি হলে দেখা যাবে দিন শেষে পুরো প্রডাকশনের একটা বিশাল তফাৎ দেখা দিবে।
সমস্যায় সংযুক্ত হয়ে সমাধান করাঃ
কাটিং, ইনপুটস এবং ট্যাকনিক্যাল সম্পর্কীত সমস্যায় যুক্ত হতে হবে এবং সমস্যার সমাধান করতে হবে।
প্রোডাকশন লাইনে যে স্টাইলটা চলতেছে তার সাথে সম্পর্কযুক্ত কাটিং ইনপুট বা অন্য কোথাও কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে সেটা মনিটরিং এবং সেই সমস্যার সমাধান করার দায়িত্ব হচ্ছে সুইং এক্সিকিউটিভ এর।
মোটকথা সুইং এক্সিকিউটিভকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যেন কোনো অবস্থাতেই যেন প্রডাকশন হ্যাম্পারিং না হয়।
ছুটির প্লান করাঃ
ওয়ার্কার এবং সুপারভাইজারদের ছুটির প্লান ফলোআপ করতে হবে।
সুইং এক্সিকিউটিভ বা টেকনিশিয়ান প্লান করবেন তার অধিনস্থ প্রত্যেকেরই ছুটি কিভাবে দিতে হবে। কাকে কোন সময় ছুটি দিতে হবে, কত দিনের জন্য ছুটি দিতে হবে, কাউকে ছুটি দিলে তার জায়গায় অন্য কে কাজ করবে ইত্যাদি বিষয়গুলো তার অংশগ্রহণ থাকাটা জরুরি।
সর্বাবস্থায় উৎপাদন চালিয়ে রাখার বিষয়টি মাথায় রেখে এসব কিছু খুবই স্মার্টলি হ্যান্ডেল করতে হবে।
ট্রেনিং প্লান করাঃ
লাইনের মধ্যে যে সমস্থা অপারেটর তুলনামূলকভাবে দুর্বল বা যারা টার্গেট অনুযায়ী প্রডাকশন আউটপুট দিতে পারছে না তাদের নিয়মিত ট্রেনিং করাতে হবে।
এবং লাইনের সকল অপারেটরকে তাদের স্কিল / দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বা কোম্পানির সিস্টেম অনুযায়ী প্রচলিত ট্রেনিং ক্যালেন্ডার অনুযায়ি ট্রেনিং প্রদান করতে হবে।
ইনপুট ও অন্যান্য সাপ্লাই ফলো আপঃ
ইনপুট এবং এক্সেসরিস সাপ্লাই ম্যানেজমেন্ট ফলোআপ করতে হবে।
প্রোডাকশন লাইনে উৎপাদন শুরু হবার আগে সুইং টেকনিশিয়ান কে এটা নিশ্চিত হতে হবে যে ইনপুট অর্থাৎ ফেব্রিক কাটিং থেকে এসেছে এবং এর সাথে সংযুক্ত ট্রিমস অন্ড অ্যাকেসরিজ সবকিছু রেডি আছে। এইজন্য স্টাইল শুরু হবার আগেই ইনপুট বা কাটিং সেকশন এবং এক্সেসরিজ স্টোরে খবর নিতে হবে যে লে আউট শুরুর জন্য যতকিছু প্রয়োজন ছিলো তা স্টোরে রেডি আছে। প্রয়োজনে আগে থেকেই ফলোআপ করতে হবে যাতে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ম্যাটেরিয়াল উৎপাদন ফ্লোরে পৌঁছে যায়।
ক্রিটিক্যাল প্রসেস এ বিশেষ নজরদারিঃ
দিনে ২ বার ক্রিটিক্যাল প্রসেস চেক করতে হবে এবং প্রতি প্রসেসের কোয়ালিটি স্টান্ডার্ড নিশ্চিত করতে হবে।
কোন একটা স্টাইল এর বিপরীতে যতগুলো ক্রিটিক্যাল অপারেশন থাকবে সেই সব কিছুতে খুব ক্লোজলি সুইং এক্সিকিউটিভকে কাজ করতে হবে। কারণ ক্রিটিক্যাল প্রসেসে কোন একটা ভুলের কারণে হতে পারে একটা সম্পূর্ণ গারমেন্টস রিজেক্ট হয়ে যেতে পারে ।
এইজন্য প্রতিটি ক্রিটিক্যাল প্রসেসে সুইং এক্সিকিউটিভকে স্পেশাল ফলো আপ করতে হবে।
টার্গেট ও ইফিসিয়েন্সি হিসেব করাঃ
দিনের শেষে প্রডাকশন, ইফিসিয়েন্সি এবং কোয়ালিটির প্লান অর্জন করতে হবে।
দিনের শেষে আজকের টার্গেট যত ছিল তা অর্জন হয়েছে কিনা এবং ইফিসিয়েন্সি প্লান যত ছিলো, কত অর্জন হলো ইত্যাদি যাবতীয় ডেটা এনালাইসিস করতে হবে এবং পরের দিনের টার্গেট সেট করে নিতে হবে।
শিপমেন্ট প্লান অনুযায়ি কাজ করাঃ
পি.এম. এর কাছ থেকে শিপমেন্ট প্লান নিতে হবে এবং ফলোআপ করতে হবে।
প্রত্যেকটা রানিং স্টাইলের শিপমেন্ট ডেট/ তারিখ আগেই জেনে নিতে হবে প্রোডাকশন ম্যানেজার এর কাছ থেকে। এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে। শিপমেন্ট প্লান থাকলে সেই অনুযায়ী কাজ করতে সুবিধা হবে। লাইনে ওটি থাকবে কি’না,থাকলেও কত ঘন্টা ইত্যাদি সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে।
কর্মীদের অনুপস্থিতি সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
বায়ার রিকোয়ারমেন্টগুলো মেইন্টেইন করাঃ
সকল নিরাপত্তা এবং কমপ্লাইন্স সম্পর্কীত ব্যাপার সংশ্লিষ্ট এরিয়ার জন্য বুঝে নিতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে।
লাইনের মধ্যে যত ধরনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো আছে যেমন আগুন, ফায়ার, চিকিৎসা ইত্যাদি বিষয় গুলি এবং টেকনিকাল যতগুলো পয়েন্ট আছে এবং যতগুলো বায়ারের যত ধরনের রিকোয়ারমেন্ট আছে তার সবগুলোই ঠিকঠাক মেনে নিয়ে প্রোডাকশন শুরু হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজারকে দরকার অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং নিয়মিত সে ব্যাপারটা ফলো আপ করতে হবে।
নিডেল / শার্প টুলস / মেটাল কন্ট্রোলিং এর জন্য করনীয়ঃ
লাইন চিপের দ্বারা শার্প টুলস / মেটাল কন্ট্রোলিং প্রসিডিউর অনুযায়ী সম্পন্ন করা নিশ্চিত করতে হবে।
একজন সুইং এক্সিকিউটিভ কে লাইনের সকল সকল ধরণের শার্প টুলস কোম্পানির সিস্টেম অনুযাযী ব্যবহার করা হচ্ছে সে বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে।
ব্রোকেন নিডেল/ শার্প টুলসের ফলো আপের বিষয়গুলিঃ
এক্ষেত্রে তাকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলি নিশ্চিত করতে হবে।
১. প্রতিদিনের শার্প টুলস রিপোর্ট সকালবেলাই আপডেট করা হয়েছে।
২. রিপোর্টের বাইরে লাইনে কোন ধরনের শার্প টুলস নেই।
এই বিষয়টা লাইন এক্সিকিউটিভ সুপারভাইজারে মাধ্যমে নিশ্চিত হবেন। তবে তিনি মাজে মাঝে দু’একটা ক্রোস চেক করে দেখতে পারেন।
৩. শার্প টুলস বোর্ড থাকলে সেটা আপডেট করতে হবে।
৪. সকল শার্প টুলস অবশ্যই বেঁধে কাজ করতে হবে।
৫. রিপোর্ট অনুযায়ি ইস্যুকৃত শার্প টুলস এর সংখ্যা, ব্যালেন্স শার্প টুলস এর সংখ্যা এবং শার্প টুলস বোর্ডের উল্লখে করার সংখ্যার সাথে মিল থাকতে হবে এবং এর পর সব কিছু সুপারভাইজার চেক করে স্বাক্ষর করেছে এটা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. শার্প টুলস এবং ব্রোকেন নিডেল পলিসি সকলে জানে এটা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে নিয়মিত সাপ্তাহিক ট্রেনিং দিয়ে সবাইকে শার্প টুলস পলিসি এবং ব্রোকেন নিডেল পলিসি জানিয়ে দিতে হবে।
গুড প্রাক্টিস হচ্ছে যখন একটা নিডেল ভেংগে যায় তখন নিডেল চেঞ্জ করার সময় তাকে ব্রোকেন নিডেল পলিসি জিজ্ঞাসা করা।
এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা গার্মেন্টসের সুইং এক্সিকিউটিভের কাজ বা দায়িত্ব কর্তব্য বা সুইং এক্সিকিউটিভের জেডি সম্পর্কে বুঝার চেস্টা করেছি। আপনি এই পোস্ট পড়ে থাকলে আমাদের জানান কোন কিছু সংশোধন করতে হবে কি’না।
ভাল থাকবেন।
সুইং টেকনিশিয়ান এর কাজ কর্ম সম্পর্কে আর কোন প্রশ্ন থাকলে জানাবেন দয়া করে।
https://www.garmentsshiksha.com/how-to-implement-an-effective-quality-training/
আল্লাহ হাফেজ।